ছবি রায় হলেন রুবি রায়
প্রবীর মিত্র
১৯৬৯ এ প্রথম নিজের সুরে নিজেই গান রেকর্ড করলেন রাহুল দেব বর্মণ । পুজোর গানের জন্য সুর তৈরি করলেন রাহুল । গানটি কিশোরকুমার গাইবেন ঠিক হল । কিশোর মন দিয়ে শুনলেন কিন্তু খুব একটা পছন্দ হোল না । তখন রাহুল ঠিক করলেন গানটি তিনি নিজেই গাইবেন । সুর তো তৈরি কিন্তু গানের কথা কে যোগাবেন ? রাহুল ধরে বসলেন তাঁর বন্ধু শ্রী শচিন গুপ্তকে । সেই সময় শচিনবাবু বোম্বাই এর বেশ কয়েকটি ছবিতে চিত্রনাট্য লেখার কাজে ব্যস্ত । শচিন গুপ্ত তো কোনদিন গান লেখেননি । এদিকে রাহুল নাছোড়বান্দা, যেমন করেই হোক পুজোর জন্য একটা গান তার চাই চাই । তখন শচিনবাবু তাঁর স্কুলজীবনের বান্ধবী ছবি রায় (হয়তো শচিন গুপ্ত-এর প্রথম প্রেমিকা যার দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়ে ছিলেন তিনি) এর কথা স্মরণ করে লিখে ফেললেন সেই বিখ্যাত গান “মনে পড়ে রুবি রায় কবিতায় তোমাকে একদিন কত করে ডেকেছি” । শচিন গুপ্ত এর কলমের আঁচড়ে ছবি রায় হয়ে গেলেন রুবি রায় । কিরওয়ানি রাগের আধারে সুর করা সেই ট্র্যাজিক প্রেমের গান আধুনিক বাংলা গানের জগতে শুধু এক নতুন অধ্যায় শুরু করেছিল তাই নয় সেই গান বাংলার সব কলেজ পড়ুয়াদের বুকে ঝড় তুলে দিয়েছিল একেবারে । এর বহু বছর পর গায়ক রূপঙ্কর রুবি রায়কে নতুন ভাবে আমাদের সামনে তুলে ধরলেন । আসলে আমাদের প্রত্যেকেরই একজন করে রুবি রায় হয়তো আছেন যিনি পুরুষ ও হতে পারেন আবার মহিলাও যাকে নীরবে ভালোবাসা যায়, শ্রদ্ধা করা যায় । এর ঠিক চার বছর পর অর্থাৎ ১৯৭৩ সালে “রুবি রায়”-গানের সুর বসিয়ে রাহুল দেব বর্মণ ‘অনামিকা’ ছবির জন্য তৈরি করলেন একটি হিন্দি গান যেটি গেয়েছিলেন কিশোর কুমার । “মেরি ভিগি ভিগি সি প্যাল কো রহে গ্যায়” গানটি সিনেমায় সঞ্জীবকুমারের লিপে বেশ হিট হয়েছিল সেই সময় । বলা বাহুল্য রাহুল দেব বর্মনের গাওয়া সেই প্রথম পুজোর গান “রুবি রায়” এই বছর সুবর্ণজয়ন্তীতে পা দিল ।
রাহুল দেব বর্মণ |
গীতিকার শচীন গুপ্ত ...
এবার মন দিয়ে শুনুন আর অনুভব করুন “রুবি রায়”
তথ্যসূত্র – আনন্দলোক, আজকাল পত্রিকা এবং অন্তরজাল