Advertisement

ফিরে দেখা সেইসব দিনগুলো, যেগুলো আমাদের ছোটবেলা ভরিয়ে রাখত

রবিবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২০

সংগীতের কিংবদন্তী

 

বাংলা গানের সাতরঙা এক পাখী

 [আগামীকাল ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২০, বেঁচে থাকলে চির আঁধারে থেকে যাওয়া এই কিন্নরকণ্ঠী এই দিনে ৮৬ বছরে পদার্পণ করতেন।  শিল্পী প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংগীতবহুল জীবনের কিছু কথা, আজ প্রথম পর্ব।] 

 

 ১৯৬৫ সালের মাঝামাঝি কোন এক রাত, নবাগতা শিল্পী নির্মলা মিশ্রের বাড়ীতে একটি ফোন এল । ওপারে আর এক শিল্পী প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায় ।  তখন নির্মলা মিশ্র সবে একটু আধটু গান গেয়ে নামডাক করেছেন । প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো একজন সিনিয়র শিল্পীর ফোন পেয়ে নির্মলা বেশ ঘাবড়ে গেলেন। প্রতিমা জানালেন তিনি একটি গান নির্মলার সাথে রিহার্সাল করতে চান ফোনের মাধ্যমে কারণ তিনি সারাদিন একদম সময় পাচ্ছেন না অন্যসব রেকর্ডিং-এর জন্য ।  গানটি হোল ‘আবিরে রাঙ্গালো কে আমায়’ । শ্যামল গুপ্তের লেখা এই গানটি সুরকার মানবেন্দ্রবাবু মনে করছেন এই গানটি ডুয়েট হবে আর গাইবেন প্রতিমা ও নবাগতা নির্মলা ।   কিন্তু প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কিছুতেই আর সময় হয় না রেকর্ডিং এর আগে একসঙ্গে বসে রিহার্সাল করার, তাই এই ফোন ।  নির্মলা মিশ্রের এক স্মৃতিচারণ থেকে জানা যায়, এতটাই গানের প্রতি ডেডিকেশন ছিল প্রতিমাদির, সেইসঙ্গে নিয়মিত রিহার্সালে সময় করতে না পারার কুণ্ঠাবোধ ।  অবশেষে, টেলিফোনেই গানের প্রায় সিংহভাগ রিহার্সাল হয়ে গেল ।  তারপর মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে রেকর্ডিং হোল সেই রাগাশ্রয়ী ডুয়েট গান যা নির্মলা মিশ্রকে অনেকটা প্রচারের আলোয় নিয়ে আসে, এর জন্য নির্মলা আজও তাঁর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রতিমা বন্দোপাধ্যায়ের প্রতি ।  এই গানটি পরে ‘মুখুজ্জে পরিবার’ ছবির জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল ।        

     

কিশোরী প্রতিমা
 

২১ শে ডিসেম্বর ১৯৩৪ সালে প্রতিমার জন্ম হয় কলকাতার টালিগঞ্জে মামার বাড়ীতে । তার আগে অবশ্য তাঁরা থাকতেন বাংলাদেশের বাহেরক গ্রামে । বাবা মণিভূষণ চট্টোপাধ্যায় শুধু সংগীতপ্রেমী বললে ভুল হবে, রীতিমত সংগীতচর্চা করতেন তিনি । কে.এল. সাইগল, শচীনদেব বর্মণের মতো গুণীরা ছিলেন তাঁর অন্তরঙ্গ বন্ধু । মা কমলাও খুব ভালো গান গাইতেন । মায়ের প্রেরনাতেই সুরের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। ছোটবেলায় মা যখন রান্না করতেন তখন ছোট্ট প্রতিমা উনুনের পাশে বসে চুপটি করে মায়ের গান শুনতেন।  কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় মাত্র ২৭ বছর বয়েসে বাবা মণিভূষণ ইহলোক ত্যাগ করলেন । স্বামীহারা কমলা মেয়ে প্রতিমাকে নিয়ে নতুন এক জীবনসংগ্রামে ঝাঁপ দিলেন।  বাবা-মা দুজনেই চেয়েছিলেন মেয়ে যেন গান শেখে, গানে বড় হয়।   এই সময় এগিয়ে এসেছিলেন বিশিষ্ট সংগীত-শিক্ষক প্রকাশকালী ঘোষাল । পণ্ডিত ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায় ছিলেন আবার প্রকাশকালী ঘোষালের সংগীতগুরু ।  প্রতিমার সংগীত প্রতিভাতো ছিলোই এবার সেটাতে শান দিতে শুরু করলেন প্রতিমার গুরু প্রকাশকালীবাবু ।  প্রতিমাকে শেখাতে লাগলেন বিভিন্নধরনের রাগাশ্রয়ী ভজন।

অবশেষে সুযোগ এল ১৯৪৫-৪৬ সাল নাগাদ, প্রতিমার প্রথম গানের রেকর্ড প্রকাশিত হল কুমারী প্রতিমা চ্যাটার্জি  নামে সেনলা কোম্পানি থেকে, বেসিক গান, ‘প্রিয় খুলে রেখো বাতায়ন’, ও ‘প্রিয় মালাখানি দিয়ে’, সুকৃতি সেন-এর সুরে  । ইতিমধ্যে বিভিন্ন জলসায় তিনি গান গাওয়া শুরু করে দিয়েছেন । জৌনপুরি রাগের উপর ‘নন্দদুলাল নাচে’ ও ‘প্রদীপ কহিল দখিনা সমীরে’ গানদুটি এতটাই জনপ্রিয় হয়েছিল তাঁর কণ্ঠে যে গানটি তাঁকে বিভিন্ন জলসায় বারংবার গাইতে হত।   এইরকম একটি জলসাতেই প্রতিমার সাথে আলাপ হল সংগীতপ্রেমী সুদর্শন যুবক অমিয় বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে এবং কিছুদিনের মধ্যে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন তিনি । এবার প্রতিমা, চট্টোপাধ্যায় থেকে হলেন বন্দ্যোপাধ্যায় ।          

দক্ষিণ কলকাতার মিলনচক্র নামে একটি ক্লাবে প্রায়ই উদ্যোক্তারা জলসার আসর বসাতেন এবং সেখানে আসতেন বিশিষ্ট সব সংগীত শিল্পীরা ।   সেখানে প্রতিমার গান শুনে সেই সময়কার এক বিখ্যাত সংগীত শিল্পী ও সুরকার সুধীরলাল চক্রবর্তীর বেশ ভালো লেগে গেল।  ১৯৫১ সালে ‘সুনন্দার বিয়ে’ ছবিতে তিনি প্রতিমাকে দিয়ে গাওয়ালেন ‘উছল তটিনী আমি সুদূরের চাঁদ’ এবং সেটাই প্রতিমার প্রথম ফিল্মে প্লেব্যাক।  গানটি খুব জনপ্রিয় হল ।  সুধীরলালের ছিল জহুরীর চোখ, গানের জন্য ঠিক লোককেই তিনি বেছেছিলেন।  তবে প্রতিমার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল পিনাকী মুখোপাধ্যায়েরঢুলিছবিটি। ১৯৫৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্তঢুলিছিল তখনকার দিনের মাল্টিস্টারার, মিউজ়িক্যালি হিট ছায়াছবি। ছবির সুরকার ছিলেন বিখ্যাত ক্লারিওনেট বাদক রাজেন সরকার ।  ছবি বিশ্বাস, সুচিত্রা সেন, অনিল চট্টোপাধ্যায়, মালা সিনহার অভিনয়ে সমৃদ্ধ এই ছবির টিকিট কাটতে হলে যে দীর্ঘ লাইন পড়ত, তারই দর্শক মোহাবিষ্টের মতো সিনেমা শেষে বেরিয়ে আসতেন রাজেন সরকারের সুরে অনবদ্য গানগুলি গুনগুন করতে করতে।  ঢুলি রেকর্ড সেইসময় বিক্রি হয়েছিল মুড়ি-মুড়কির মতো।  হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, যূথিকা রায়ের মতো জনপ্রিয় শিল্পীদের পাশে চমকে দিয়েছিলেন নবীনা প্রতিমা।  রাজেন সরকার ছবির জন্য একটি ডুয়েটগানে প্রতিমাকে নির্বাচন করেছিলেন চুপি চুপি এল কেগানে । পাতিয়ালা ঘরানার ওস্তাদ গাইয়ে প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে  এই গানে সমানে পাল্লা দিলেন প্রতিমা এবং এই ছবিতেই নিজের জাত চিনিয়ে দিলেন অপর একটি গানে, নিঙাড়িয়া নীল শাড়ি শ্রীমতী চলে   রাগাশ্রিত এই গানটি প্রতিমার চিকন গলায় একেবারে পারফেক্ট ।  কত না সুক্ষ্ম অলংকরণ প্রতিমা সহজাত নৈপুণ্যে ও মাধুর্যে ফোটালেন অথচ কখনই তা জাহির করা নয় । মালা সিনহার লিপে এই গানে প্রতিমা তাঁর রাগের যে ছোট ছোট কাজ গলায় তুলেছিলেন, তা শুনে স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়।   তাঁর অস্ফুট জিজ্ঞাসারই প্রতিধ্বনি উঠেছিল সেই সময়ের তাবড় সঙ্গীতকুলে। এই   শ্রীকণ্ঠী কে  

এর ঠিক পরের বছর ১৯৫৫ সালে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় তাঁর সুরারোপিত উত্তম-সুচিত্রা অভিনীত ‘শাপমোচন’ ছবিতে প্রতিমাকে চিন্ময় লাহিড়ীর সঙ্গে গাইবার সুযোগ করে দিলেন।  ‘ত্রিবেণী তীর্থপথে কে গাহিল গান’, এই রাগাশ্রয়ী গানটি রেকর্ডিং সময় সবাই অবাক হয়ে দেখল, যেখানে চিন্ময় লাহিড়ী তাঁর গানের সময় তালের ওঠানামায় হাতের মুদ্রার ব্যবহার সেখানে প্রতিমা মূর্তিবৎ ধীরস্থির । শুধু গানের জন্য তাঁর ঠোঁটটুকু নড়ছে ।   ছবিতে এই গানের লিপে ছিলেন অভিনেত্রী সুচিত্রা সেন।  এই গানে লিপ দেওয়াও ছিল বেশ কঠিন কাজ, তাই বারবার প্রতিমার সাহানগরের বাড়িতে চলে আসতেন মহানায়িকা,  যেখানে নাকি দিবারাত্র রেওয়াজে ডুবে থাকেন মহাগায়িকা।    প্রতিমার কাছে তিনি প্রায়ই আবদার করতেনযদুভট্টছবিরবাবুল মোরা নৈহার ছুটো হি যায়গানটি শোনাতে।  ১৯৫৪ সালে, পণ্ডিত জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষের সংগীত পরিচালনায় ‘যদুভট্ট’ ছবিতে প্রতিমা এই গানটি গেয়েছিলেন এবং তাতে ঢেলে দিয়েছিলেন তাঁর বিখ্যাত সাংগীতিক সরলতা।   এই গানের জন্য তিনি প্রথমবার বি এফ জে (Bengal film journalist) পুরস্কারে ভূষিতা হয়েছিলেন।   প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, নবাব ওয়াজ়িদ আলি শাহের হৃদয়ের ভিতর থেকে উঠে আসা এই গানটিতে যুগে যুগে সেরা শিল্পীরা কণ্ঠদান করেছেন। বেগম আখতার, কুন্দনলাল সায়গল, গিরিজা দেবী, ভীমসেন জোশি, জগজিৎ সিংহ সকলেরই সেরা অ্যালবামে এই ভৈরবী-ঠুমরি থাকবেই।

১৯৬০ সালে প্রতিমা গাইলেন ‘মুরলী বাজে প্রেম-বৃন্দাবনে’, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সুরে ‘গরীবের মেয়ে’ ছবির জন্য ।  অসাধারন জনপ্রিয় আর একটি গান । ওই একই বছরে সুযোগ এল তপন সিনহা পরিচালিত ‘ক্ষুধিত পাষাণ’ ছবিতে গান গাইবার জন্য ।  সংগীত পরিচালক আলি আকবর খানকে তপন সিনহা অনুরোধ জানালেন যে তিনি রবীন্দ্রনাথের একটি গানের সুর এই ছবিতে ব্যবহার করতে চান ।  ‘যে রাতে মোর দুয়ারগুলি ভাঙ্গল ঝড়ে’ এই গানের সুরের উপর ভিত্তি করে ছবির সুরকার আলি আকবর খান সৃষ্টি করলেন বিখ্যাত গান ‘ক্যায়সে কাটে রজনী ইয়ে সজনী’ । পণ্ডিত আমীর খান সাহেবের সাথে যোগ্য সঙ্গত করলেন প্রতিমা এবং গানের সঙ্গে রবীন্দ্রসঙ্গীতটি গাইলেন দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়।   এর ঠিক পরের বছর প্রতিমা আবার ডাক পেলেন তপন সিনহার কাছ থেকে ‘ঝিন্দের বন্দী’ সিনেমায় গান গাওয়ার জন্য। আলি আকবর খানের সুরে প্রতিমা এবার একটি সোলো গান গাইলেন, ‘মে হো গেয়ি দিওয়ানি’ ।  

প্রতিমা শুধু রাগনির্ভর সঙ্গীতে থেমে থাকেন নি। ভক্তিরসাত্মক গান, অতুলপ্রসাদী, নজরুলগীতি, লোকায়ত গান, আধুনিক রম্যগীতি সবেতেই মুক্তো ছড়িয়েছেন। পঞ্চাশের দশক থেকেই তিনি এইচএমভি- আর্টিস্ট। ১৯৬৯ এ হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সুরে প্রতিমার সেই বিখ্যাত কীর্তন আঙ্গিকের গান ‘কুসুম দোলায় দোলে শ্যামরায়’ অথবা এর পাশে অতুলপ্রসাদ সেন-এর লেখা সেই হৃদয়স্পর্শী গান, ‘সংসারে যদি নাহি পাই সাড়া’ গানদুখানি আজও সমস্ত সংগীতপ্রেমীদের মন ছুঁয়ে যায়।   অপরদিকে রাইচাঁদ বড়ালের সুরে ‘নীলাচলে মহাপ্রভু’ ছবিতে প্রতিমার কণ্ঠে ‘মাধব বহুত মিনতি’ এবং ‘কি রূপ দেখিনু’ কে ভুলতে পারে। ১৯৬০ সালে  ‘নুতন ফসল’ ছবিতে রাইচাঁদ বড়াল ও বিলায়েত খানের যুগ্ম সংগীত পরিচালনায় তিনি গাইলেন লোকায়ত গান, ‘আমার যেমন বেনী তেমনি রবে’ এবং নির্মলেন্দু চৌধুরীর সাথে ডুয়েট ‘ওই মানুষকে চিনবি কেমনে’ অথবা আরও একটি জনপ্রিয় গান ‘সাধ করে পুষিলাম ময়না’ সেই সময়ের খুব জনপ্রিয় গান।

রবীন চট্টোপাধ্যায়ের সুরে ‘মায়ার সংসার’ ছবিতে ১৯৬২ সালে প্রতিমা, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে গাইলেন ‘আমার প্রভাত মধুর হল’। গানতো নয় যেন পুজোর নৈবেদ্য, যারা শুনেছেন তাঁরাই একবাক্যে স্বীকার করবেন এই কথাটা।   বহুকাল আগে আঙ্গুরবালা দেবী ধীরেন চট্টোপাধ্যায়ের কথায় ও ভূতনাথ দাসের সুরে গেয়েছিলেন ‘আমার হাত ধরে তুমি নিয়ে চল সখা’ এবং ‘আমার জীবন নদীর ওপারে’ (কথা বরদাপ্রসন্ন দাশগুপ্ত) ।  ১৯৬৭ সালে প্রতিমা সেই গানের রিমেক করলেন পুরোপুরি নিজের মতো করে ‘ছুটি’ ছবির জন্য অরুন্ধুতী দেবীর সংগীত পরিচালনায়। পরবর্তী বছর প্রতিমার কাছে অনুরোধ এল ‘চৌরঙ্গী’ ছবিতে একটি রবীন্দ্রসংগীত গাওয়ার জন্য। অসীমা ভট্টাচার্যের সংগীত পরিচালনায় তিনি গাইলেন ‘এই কথাটি মনে রেখো’।   অবশ্য এখানে একটা কথা বলে রাখা দরকার, ১৯৫৩ সালে প্রতিমা ‘বৌ ঠাকুরানীর হাট’ ছবিতে উৎপলা সেন ও অন্যান্যদের সাথে গেয়েছিলেন তাঁর প্রথম রবীন্দ্রসংগীত, ‘চাঁদের হাসি বাঁধ ভেঙ্গেছে’।  ‘ছুটি’, ‘চৌরঙ্গী’ ও ‘পরিণীতা’ ছবির গানগুলির জন্য প্রতিমা পর পর তিন বছর বি এফ জে পুরস্কারে ভূষিতা হয়েছিলেন।   ১৯৭০ সালে ভুপেন হাজারিকা ‘এখানে পিঞ্জর’ ছবির  প্রতিমাকে দিয়ে অতুলপ্রসাদের একটি জনপ্রিয় গান রেকর্ডিং করালেন ‘একা মোর গানের তরী’ ।  এই গানের মাধ্যমে প্রতিমা আরও একবার প্রমান করে দিলেন তিনি একজন জাত শিল্পী।    

এরপর তিনি বেশ কিছু ছবিতে গান গেয়েছেন যেমন এই মুহূর্তে মনে পড়ছে সিঁথির সিন্দুর, প্রিয়া, হ্রদ, অন্তরীক্ষ, সোনার কাঠি, নদের নিমাই, বিপাশা, আলো আমার আলো, হীরে মানিক ইত্যাদি ছবি।   ‘এই ছোট্ট ছোট্ট পায়ে চলতে চলতে ঠিক পৌঁছে যাব সেই চাঁদের পাহাড় দেখতে পাব’, হীরে মানিক ছবির এই গানটিতে প্রতিমার সংগে ছিলেন আরতি মুখোপাধ্যায়।  ১৯৭৯ সাল নাগাদ এই ছবিটির অন্যান্য গানের পাশে এই গানটি সাংঘাতিক হিট হয়েছিল। গানের কথা লিখেছিলেন পুলক বন্দ্যোপাধ্যায় ও সুরারোপ করেছিলেন মৃণাল বন্দ্যোপাধ্যায়।  কমপ্লিট আর্টিস্ট বলতে যা বোঝায়, প্রতিমা ছিলেন তাই । কি ছায়াছবির গান, রবীন্দ্রসংগীত বা অতুলপ্রসাদের গান সবেতেই তিনি ছিলেন অদ্বিতীয়া । ছায়াছবির গানের পাশাপাশি তাঁর বেসিক গানের জনপ্রিয়তাও খুব একটা কম নয়। এই লেখার পরবর্তী পর্বে চেষ্টা করব প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেসিক গান ও এই মহাজীবনের শেষ কটা দিনের কিছু অজানা কথা তুলে ধরার।  

(পরবর্তী অংশ প্রকাশিত পড়তে ক্লিক করুন এখানে)

 লেখায় ব্যবহৃত কয়েকটি গানের ইউটিউব লিংকঃ

 

 ঢুলি ছবিতে প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে  এই গানে সমানে পাল্লা দিয়েছিলেন প্রতিমা 

শাপমোচন ছবির সেই বিখ্যাত গান 'ত্রিবেণী তীর্থপথে কে গাহিল গান'

ক্ষুধিত পাষাণ ছবির সেই গান 

সংসারে যদি নাহি পাই সাড়া তুমি তো আমার রহিবে - অতুলপ্রসাদের এই 

গানে প্রতিমা যেন নিজেকে উজাড় করে দিয়েছিলেন 


প্রবীর মিত্র

২০/১২/২০২০



৭টি মন্তব্য:

@অনুভব বলেছেন...

দারুন লেখা। অনেক নতুন কিছু জানলাম, শিখলাম। এমন অনেক লেখা ভবিষ্যতে পাবো আপনার কাছ থেকে এই আশাই রাখছি।😍😍👌👌👍

Probir's Feel Notes বলেছেন...

ধন্যবাদ। এই ব্লগটি ফলো করুন চেষ্টা করবো আরও অনেক তথ্য দিতে। ভালো থাকবেন।

Unknown বলেছেন...

Prabad pratim shilpir janmya. diney tomar ai upasthpana/srdhyaarghya prasansahar jogya.Abong tumi tomar juli/gyaner bhander theke aaro kichhu likho tahole besh khushi habo.

Unknown বলেছেন...

Besh bhalo tothty bohul lekha.

Unknown বলেছেন...

khub valo likhechen, onek informative, valo laglo 🙏

Unknown বলেছেন...

Biswajit Mukherjee. Vasha harie felechi vai.sotti asadharon.sob musical personalities nie lekho.asadharan prochesta o hridaygrahi lekha

Probir's Feel Notes বলেছেন...

@Biswajit Mukherjee, Thank you sir. Bhalo thakben.