Advertisement

ফিরে দেখা সেইসব দিনগুলো, যেগুলো আমাদের ছোটবেলা ভরিয়ে রাখত

শুক্রবার, ১১ জুন, ২০২১

বিকাশ কথা - ৩

 

বিকাশ কথা

প্রবীর মিত্র

বাংলায় একটা প্রবাদ আছে কলঙ্ক আছে বলেই চাঁদ এত সুন্দর। পাঁকে সে ফোটে বলে তাই সে পঙ্কজ। খলনায়ক ছাড়া কোন সিনেমায় নায়ক অসম্পূর্ণ।  অবশ্য সেই খল মুখোশের চোখেও থাকে জল। একজন খলনায়কও দর্শকের মনের আসনে অনেকখানি জায়গা করে নিতে পারেন।  আমরা সদ্য পেরিয়ে এলাম সত্যজিৎ রায় মশাই-র জন্মশতবর্ষ, অথচ বাংলা চলচ্চিত্রের অপর এক রায়মশাই-ও তাঁর জন্মশতবর্ষ পেরিয়ে এসেছেন প্রায় বছর পাঁচেক হল।  গত ১৬ই মে ছিল বাংলা ছবির নায়ক হবার সব গুণ থাকাসত্ত্বেও প্রতিনায়ক, প্রযোজক ও পরিচালক বিকাশ রায়ের ১০৫ তম জন্মদিন (জন্ম ১৬ই মে ১৯১৬) । আজ এই লেখার মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করব এই প্রতিনায়কের বেশ কিছু মুহূর্তের কথা। আজ তৃতীয় বা অন্তিম পর্ব। কেমন লাগলো জানালে খুব ভালো লাগবে।   যদি আগের পর্বগুলো এখনো পড়া না হয়ে থাকে তাহলে এখানে ক্লিক করুন  প্রথম পর্ব   ।।  দ্বিতীয় পর্ব ।।    

 

সত্তর দশকের গোড়ার দিক থেকেই বিকাশ আস্তে আস্তে ছবির সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছিলেন কারণ তাঁর শারীরিক অবস্থা তখন তাঁর প্রতিকূলে চলে গিয়েছিল।  মন দিয়েছিলেন লেখালেখিতে ও বিভিন্ন বই পড়ে   নিজের ঘরকে করে নিয়েছিলেন একটা ছোটখাট লাইব্রেরী যাতে শোভা পেত খ্যাতনামা সব সাহিত্যিকদের লেখা বই, প্রবন্ধ এছাড়াও পুরাণ, উপনিষদ, মহাভারত, রামায়ণ ইত্যাদি নানা রকম বই।  আর একটা অদ্ভুত ব্যাপার, বাড়ীতে তিনি কোন ফিল্ম সংক্রান্ত আলোচনা বা কোন ফিল্ম ম্যাগাজিন রাখা পছন্দ করতেন না। বাড়ীতে হয়তো কোন ছবির পরিচালক, প্রযোজক অথবা নিজের অভিনেতা বন্ধুরা আসতেন বিকাশের সাথে প্রাণখোলা আড্ডা দিতে কিন্তু সেই সময় বাড়ীর ছোটদের সেই ঘরে প্রবেশ নিষেধ।  প্রাণপনে চেষ্টা করতেন নিজের পরিবারকে এসব থেকে দূরে রাখতে, কারণ তিনি তাঁর সন্তানদের কাছে একজন দায়িত্ববান বাবাও ছিলেন। অতি সাধারন অনাড়ম্বর জীবন যাপন করতেন।  প্রভাত আহ্নিক দিয়ে তাঁর সকাল শুরু হত। 

বিকাশ রায়

কবিতা
আবৃত্তির প্রতি অনুরাগ শৈশব থেকেই ছিল।  অবসর সময়ে বাড়ীতে উদাত্ত কণ্ঠে পাঠ করতেন তাঁর উপাস্য দেবতা রবীন্দ্রনাথের কবিতা।  তাঁর ছেলে সুমিত ও মেয়েকে খুব উৎসাহ দিতেন গান ও আবৃত্তির ব্যাপারে।   কথা বলা বা আবৃত্তির সময়  প্রতিটি শব্দ উচ্চারণে যত্ন এবং স্বর প্রক্ষেপণ ইত্যাদি বিষয়গুলো তাঁর সন্তানদেরকে খুব যত্নের সাথে বোঝাতেন। সদ্যপ্রয়াত প্রবাসী ইঞ্জিনিয়ার পুত্র সুমিত রায়ের পূর্বের একটি স্মৃতিচারণায় জানা যায়, সিনেমার ব্যাপারে কোন কথা না বললেও তাঁদের বাবা সবসময় গানবাজনা, কবিতাপাঠ ইত্যাদিতে উৎসাহ দিতেন।  ছবির শুটিং এর কাজ থেকে ফিরে সময় পেলেই ছেলে সুমিতের সঙ্গে লাইব্রেরীতে বসে পাঠ করতেন — ‘শেষের কবিতা’, ‘ম্যাকবেথ’ –এর নির্বাচিত অংশ আবার কখনো  সঞ্চয়িতা পাতা উল্টে বেছে নেওয়া কোন প্রিয় কবিতা।    বাবা ও ছেলের যুগল পাঠে ঘর একেবারে গমগম করে উঠত নিজের ছেলেকে ডাকতেনবেণুবাবুবলে। তবে ছেলেমেয়ের মুখে সাদামাঠাবাবাডাক শুনতে চাইতেন না। তাঁকে সন্তানেরা বলতেনবাবু   

১৯৭২ সালের কোলকাতা শহরে তখন রমরমিয়ে সিনেমার পাশাপাশি চলত বানিজ্যিক থিয়েটার। বিশ্বরূপা,  রঙমহল, রংগনা, স্টার থিয়েটার, প্রতাপ মঞ্চ, কাশী বিশ্বনাথ মঞ্চ ইত্যাদি বানিজ্যিক থিয়েটার হলগুলো প্রতি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যেবেলা ও শনি-রবি ও অন্যান্য ছুটির দিনগুলোতে দিনে দুটো করে থিয়েটারের শো হত।  কিন্তু কালের নিয়মে আজ সিনেমা ও থিয়েটারগুলি কোলকাতা শহর থেকে বিলুপ্ত। আজও কোন প্রবীণ বা সেইসময় থিয়েটারের সঙ্গে  যুক্ত ব্যাক্তি কঙ্কালসার এইসব প্রেক্ষাগৃহের সামনে দিয়ে গেলে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলেন সেইসব স্বর্ণযুগের দিনের কথা ভেবে।  

বিকাশের ৫৬ বছর বয়সের জন্মদিনের রাতে ফোন এল বিশ্বরূপা থিয়েটার-এর মালিক রাসবিহারী সরকারের।  বিকাশ জানতেন রাসবিহারীবাবু একজন থিয়েটার অন্ত প্রাণ এবং তিল তিল করে তিনি তাঁর সাধের বিশ্বরূপা থিয়েটার তৈরি করেছেন। সেই সময় বিশ্বরূপা থিয়েটার একের পর এক উপহার দিয়ে চলেছে মঞ্চসফল নাটক।  প্রতি সপ্তাহে থিয়েটারভবনের সামনে প্রচুর ভিড় হয় টিকিট সংগ্রহের জন্য।  সিনেমার সমস্ত খ্যাতনামা অভিনেতা অভিনেত্রীরা সশরীরে এসে এখানে অভিনয় করছেন এবং তাঁদেরকে সামনাসামনি দেখা অথবা নাটকের শেষে রুপোলী পর্দার সেই সব স্বপ্নের নায়ক নায়িকাদের সাথে একটু কথা বলে  নিজেদেরকে ধন্য করে বাড়ি ফেরা, এইসব  একটা বাড়তি আকর্ষণ থাকত দর্শকদের মধ্যে।   রাসবিহারীবাবু জানালেন তিনি শঙ্করের বেস্ট সেলার উপন্যাস ‘চৌরঙ্গী’-কে থিয়েটারে রূপ দিতে চান এবং ওই নাটকের বিখ্যাত চরিত্র সত্যসুন্দর (স্যাটা) বোস-এর চরিত্রে তিনি বিকাশ রায়কে নির্বাচিত করেছেন।  প্রস্তাব শুনে বিকাশ একটু দ্বিধায় পড়লেন, কারণ তিনি বহুদিন মঞ্চঅভিনয় থেকে বিচ্ছিন্ন। মাঝে ১৯৫২ সালে শ্রীরঙম মঞ্চ-তে নটসম্রাট  শিশিরকুমার ভাদুড়ীর কাছে ‘চিরকুমার সভা’ নাটকে অভিনয়ের সুযোগ এসেছিল কিছুদিনের জন্য।  নটসম্রাটের কাছে অভিনয়ের মাধ্যমে রপ্ত করেছিলেন মঞ্চনাটকের সুক্ষ্ম কলাকৌশল।  তাছাড়া ১৯৬৮ এর সুপারহিট ছবি ‘চৌরঙ্গী’-তে উক্ত চরিত্রে তাঁর ভ্রাতৃপ্রতিম উত্তমকুমার অসাধারন অভিনয় করে গেছেন। দর্শকের মানসপটে আজও স্যাটা বোস মানেই উত্তমকুমার।  মন থেকে কোন সায় পাচ্ছিলেন না বিকাশ।  কিন্তু পরেরদিন সকালে রাসবিহারীবাবু স্বয়ং উপস্থিত হলেন বিকাশ রায়ের ঢাকুরিয়ার বাড়ীতে ।  নাটকের পার্ট শোনালেন এবং  তারসাথে উপযুক্ত মর্যাদা দিয়ে নিয়ে যেতে চাইলেন বিকাশকে ।  রাসবিহারীর অনুরোধ আর ফেলতে পারলেন না বিকাশ।  রাসবিহারীবাবুর বিশ্বরূপা থিয়েটার-এ সেই সময় অভিনীত হচ্ছিল বিমল মিত্রের উপন্যাস অবলম্বনে নাটক ‘বেগম মেরী বিশ্বাস’। কিন্তু ব্যবসায়িক দিক থেকে নাটকটি তেমন দর্শক টানতে পারছিল না। এদিকে আর কয়েকমাস পরেই দুর্গাপূজো, সেই সময় দর্শক টানার জন্য তিনি এই নাটকটি বেছে নিয়েছিলেন।   হাতে মাত্র মাস চারেক সময়, কোমর বেঁধে রিহার্সালে নেমে পড়লেন বিকাশ এবং সঙ্গে এলেন একঝাঁক চলচ্চিত্র জগতের সহকর্মী যেমন ফোকলা চ্যাটার্জি-এর চরিত্রে তরুনকুমার, মিসেস পাকড়াশীর চরিত্রে মঞ্জু দে, লেখক বা কখক শঙ্করের চরিত্রে দিলীপ রায়, নিত্যহরি বা ন্যাটাহরির চরিত্রে সত্য বন্দ্যোপাধ্যায়, অনিন্দ্য-এর চরিত্রে অজয় গাঙ্গুলী এবং করবীর চরিত্রে এলেন জয়শ্রী সেন (পরে এসেছিলেন আরতি ভট্টাচার্য)। 

পুজোর ঠিক আগে শুরু হল ‘চৌরঙ্গী’ নাটক। দর্শকরা সেই সময় অবাক হয়ে দেখতেন মঞ্চের বিশাল পর্দা সরছে আস্তে আস্তে আর মঞ্চের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছেন ফোকলা চ্যাটার্জি রূপী তরুনকুমার, তিনি হাঁক পাড়ছেন, ‘স্যাটা কোথায়? হোয়ার ইজ স্যাটা?’   

-‘আই অ্যাম হিয়ার স্যার’ - দর্শকরা তখন পিলে চমকে গিয়ে পিছন ফিরে অবাক হয়ে দেখত তাঁদের ঠিক পেছন দিকের অন্ধকার সিটগুলোর একটা সিট থেকে উঠে এসে আলোকিত মঞ্চে উঠে অভিনয় শুরু করতেন বিকাশ রায়।  সেই সময় দর্শকদের মধ্যে থেকে উঠে এসে অভিনয় করার স্টাইলটাও একেবারেই নতুন আর নাটকের শুরুতে এটা একটা আলাদা উত্তেজনার সৃষ্টি করত দর্শকের মানসপটে।  শোনা যায়, রঙমহল থিয়েটারের জনপ্রিয় নাটক 'উল্কা'-তেও এই রকম একটা কাণ্ড ঘটাতেন জহর রায়।  একটি চিনেম্যানের চরিত্রে 'তুপে'র ভূমিকায় তিনি লেডিস এন্ড জেনতেলম্যান বলতে বলতে অডিটোরিয়াম দিয়ে মঞ্চে প্রবেশ করতেন।   যারা 'উল্কা' নাটকটি সেইসময় প্রত্যক্ষ করেছেন একমাত্র তারাই জানেন এই স্টাইলের কপিরাইট একমাত্র জহর রায়ের।   'চৌরঙ্গী' বেশ হিট হোল এবং বিশ্বরূপা থিয়েটারের এই মঞ্চসফল নাটক থেকেই দর্শক পেল থিয়েটার অভিনেতা বিকাশ রায়কে। 

‘চৌরঙ্গী’-র হাউসফুল শো প্রায় সাড়ে পাঁচশো রজনী অতিক্রম করার পর রাসবিহারীবাবু সিদ্ধান্ত নিলেন এবার নাটক বদলাবেন।  এবার তিনি বিমল মিত্রের আরও একটি সাড়া জাগানো উপন্যাস বাছলেন নাটকের জন্য।  শুরু হোল ‘আসামী হাজির’ নাটকের মহড়া।  এবার এই নাটক থেকে বাদ গেলেন মঞ্জু দে, সত্য বন্দ্যোপাধ্যায়। বিকাশের সঙ্গে তরুণ কুমার, দিলীপ রায়, আরতি ভট্টাচার্যরা রইলেন তার সাথে অভিনয় করতে এলেন চলচ্চিত্র জগতের আর দুই দিকপাল অভিনেতা পাহাড়ি সান্যাল ও রবীন মজুমদার।  এই নাটকে তিন বৃদ্ধের অভিনয় অর্থাৎ বিকাশ রায়, পাহাড়ি সান্যাল ও রবীন মজুমদারের অভিনয় দর্শকরা সেই সময় খুব উপভোগ করতেন।  এই নাটকও চৌরঙ্গির মতো বেশ হিট কিন্তু পাহাড়ি সান্যালের অকালপ্রয়ানে  (১০ই ফেব্রুয়ারি ১৯৭৪) নাট্য অভিনয়ে কিছুটা ছেদ পড়ল।  তিনজনের অভিনয়ে একটা দারুন বোঝাপড়া তৈরি হয়েছিল নিজেদের মধ্যে যেটা ভেঙ্গে গেল পাহাড়ি সান্যালের অভাবে।  বিকাশ যেন কিছুতেই মন দিতে পারছিলেন না অভিনয়ে।  তা স্বত্বেও এই নাটকের অভিনয় প্রায় সাড়ে ছয়শো রজনী চলেছিল।  ঠিক সেই অবস্থায় রাসবিহারীবাবু আবার মনস্থির করলেন এই নাটক বন্ধ করে অন্য একটি নাটক নির্বাচন করবেন। এবার ধৈর্যের বাঁধ ভাঙল বিকাশের।  পদত্যাগ করলেন বিশ্বরূপা থিয়েটার থেকে।  

বিশ্বরুপার পর বিকাশ রায় আমন্ত্রণ পেলেন শ্যামাপ্রসাদ মঞ্চ থেকে। টালা পার্কের কাছে ছোট্ট সেই হল-এ মাত্র শ’দেড়েক লোক ধরে। নাট্যকার সমর মুখার্জির লেখা নাটক ‘বিষ’ । অভিনয় করার সময় সঙ্গে পেলেন মলিনা দেবী, ভানু বন্দোপাধ্যায়, সন্তোষ দত্ত, অঞ্জনা ভৌমিক, গৌতম চক্রবর্তী প্রমুখ শিল্পীবৃন্দদের। প্রায় শ’দেড়েক রজনী পার হবার পর বিকাশ নিজেই বেরিয়ে এলেন নাটক থেকে। শারীরিক অসুস্থতার জন্য কিছুদিন মঞ্চ থেকে বিশ্রাম নিয়ে বেশ কয়েকটি ছবিতে আবার শুটিং শুরু করলেন।

তরুন কুমার ও সত্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে বিকাশের সম্পর্ক খুব ভালো ছিল। ‘চৌরঙ্গী’ নাটকের সময় থেকেই সত্যবাবুর ইচ্ছে ছিল নিজে একটা বানিজ্যিক নাটক প্রযোজনা ও নির্দেশনা করবেন। বিশ্বরূপা ছাড়ার সময় থেকে সত্য বন্দ্যোপাধ্যায় বিকাশকে বলে রেখেছিলেন, ‘জানিনা আপনার মতো লোকের সাথে আর কবে মঞ্চে একসাথে অভিনয় করতে পারব। যদি নিজে কিছু করতে পারি তাহলে সেইদিন ডাকব আপনাকে। কথা দিন আপনাকে আসতেই হবে’।

কথা রেখেছিলেন বিকাশ, সত্য বন্দ্যোপাধ্যায় ও তরুনকুমারের ডাকে তিনি এলেন তাঁদের করা ‘কল্পতরু গোষ্ঠী’-তে ।  শুরু হোল ‘নহবৎ’ নাটক।  এই নাটক কিছু দিন রঙমহল-এ চললেও পরে সেটা দক্ষিণ কোলকাতার তপন থিয়েটার-এ স্থানান্তরিত হয়।  এই নাটকে বিকাশ, সত্য বন্দ্যোপাধ্যায় ও তরুন কুমারের পাশাপাশি পেলেন রত্না ঘোষাল, প্রদীপ মুখোপাধ্যায় এবং কিছুদিনের জন্য মহুয়া রায়চৌধুরীকে।  তপন থিয়েটারে সেই নাটক ইতিহাস সৃষ্টি করল।  বিকাশ রায় অভিনয় করেছিলেন জ্ঞানবাবু চরিত্রে।   অভিনেত্রী রত্না ঘোষালের স্মৃতিচারণা থেকে জানা যায় এই নাটকটির সাথে তিনি এমন ভাবে মিশে গিয়েছিলেন যে সুদূর বোম্বাই থেকে শক্তি সামন্ত বিকাশকে তাঁর পরবর্তী দ্বিভাষিক ছবি ‘অনুসন্ধান’ –এর জন্য মনোনীত করলেও বেশ কিছুদিন থিয়েটার বাদ দিয়ে তাঁকে দার্জিলিং থাকতে হবে, সেটা ভেবে তিনি শক্তি সামন্তর প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।  অনেকে বুঝিয়েছিলেন এতো বড় একটা ব্যানারের কাজ ছাড়া উচিত হবে না কিন্তু বিকাশ নাছোড়, কিছুতেই রাজী হলেন না ‘নহবৎ’ নাটকের অভিনয় ছেড়ে অন্য কোথাও কাটাতে।  অগত্যা শক্তি সামন্ত বিকাশ রায়ের জায়গায় উৎপল দত্তকে নিয়ে আসেন ছবিতে।  ‘নহবৎ’ নাটকটি এতোটাই জনপ্রিয় ছিল যে প্রতিটি শো-এর শুরুতে টিকিট কাউন্টারে পুলিশ রাখতে হত গণ্ডগোল এড়ানোর জন্য।  টিকিট রীতিমতো ব্ল্যাক হত বলে জানা যায়। 

মঞ্চ অভিনয়ের পাশাপাশি বিকাশ এবার ডাক পেতে থাকলেন তাঁর একসময়ের কর্মস্থল আকাশবানী থেকে।  রেকর্ডিং করলেন বেশ কিছু বেতার নাটক যার মধ্যে তৃপ্তি মিত্রের সাথে অভিনীত মনোজ মিত্রের ‘শুকসারী’ নাটকটি বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল।  একদিকে শুটিং অন্যদিকে বেতার নাটক, ‘নহবৎ’ নাটকের জন্য আর সময় বের করতে পারছিলেন না বিকাশ, একসময় আর থিয়েটার করব না বলে সেই যে তপন থিয়েটার থেকে বেরিয়ে এলেন আর কোনদিন থিয়েটারমুখী হন নি।   এবার বেতার নাটক নিয়ে শুরু করে দিলেন নানা ধরনের স্বরক্ষেপণ এক্সপেরিমেন্ট।  বহুবছর আগে রেডিও-তে চাকরী করার সুবাদে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কাছে শেখা মাইক্রোফোনের নানা রকম ভয়েস থ্রোয়িং টেকনিকগুলো তিনি বিভিন্ন নাটকে প্রয়োগ করতে লাগলেন।   একদিন বেতার নাটকের খ্যাতনামা প্রযোজক অজিত মুখোপাধ্যায় বিকাশের কাছে একটি বেতার নাটকের অভিনয়ের জন্য প্রস্তাব নিয়ে এলেন । সত্যজিৎ রায়ের নিজের গল্প ও সিনেমা, ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’-এর বেতার নাট্যরূপ দিয়েছেন আর এক নাট্যব্যাক্তিত্ব অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়।  সত্যজিৎ রায় গল্পের বেতারনাট্যরূপ শুনে খুশী হয়ে অনুমতি দিয়েছেন নাটকটি বেতারে প্রচার করার।  বহুবছর ধরে মনে মনে পুষে রাখা একটা প্রবল ইচ্ছে এবার বোধহয় সত্যি হতে চলেছে।  বিশ্ববিখ্যাত পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের সৃষ্টির উপর কাজ করা।  ১৯৭৩ সালের ৫ ই জানুয়ারি আকাশবানীতে সম্প্রচারিত হয়েছিল ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’ নাটকটি আর এটাই সত্যজিৎ রায়ের গল্প অবলম্বনে প্রথম বেতার নাটক।  বিকাশ করেছিলেন রায়বাহাদুর ইন্দ্রনাথ চৌধুরীর ভূমিকা যেটি সিনেমায় করেছিলেন ছবি বিশ্বাস। শোনা যায়, নাটকটি প্রচার হবার কিছুদিন পর স্বয়ং সত্যজিৎ রায় টেলিফোনে বিকাশের অভিনয়ের প্রশংসা করেছিলেন।  নাটকে বিকাশের ভয়েস মডিওলেশন, পজ, এক্সপ্রেশন শুনে সত্যজিৎ মুগ্ধ।  সেই থেকেই বিকাশের সাথে সত্যজিৎ এর সম্পর্ক একটা অন্য জায়গায় গিয়েছিল।  যার ফল স্বরূপ আবার সত্যজিৎ স্বয়ং তাঁকে নির্বাচন করেছিলেন তাঁর লেখা নিজের গল্প ‘বাক্স রহস্য’-তে, যার বেতার নাট্যরূপ দিয়েছিলেন সত্যজিৎ নিজে। এই নাটকে ফেলুদারূপী সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের পাশাপাশি মিঃ পাকড়াশীর চরিত্রে বিকাশ রায় তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। 

বিকাশ রায়ের বিশেষ গুণমুগ্ধ ছিলেন সত্যজিৎ রায়

এরপর বিবিধভারতীতে বেতার বিজ্ঞাপন নাটকের জন্য ডাক এল তৎকালীন বিখ্যাত রেকর্ডিং স্টুডিয়ো ‘লিভিং সাউন্ড’ থেকে।  সেই সময় ‘লিভিং সাউন্ড’ তৈরি করত বিভিন্ন বিজ্ঞাপনদাতাদ্বারা আয়োজিত পনের মিনিট, আধ ঘণ্টা বা ধারাবাহিক নাটক যেগুলি বিবিধভারতী বেতার তরঙ্গে প্রচারিত হত।  ‘লিভিং সাউন্ড’-এর অপর বর্ষীয়ান অভিনেতা, ধীমান চক্রবর্তীর স্মৃতিচারনায় জানা গেল সেই সময় স্টুডিয়োতে চাঁদের হাট বসত আর বিকাশ রায় ও ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন সেই আসরের মধ্যমণি।  রেকর্ডিং-এর ফাঁকে ফাঁকে বেতার অভিনয়ের টুকিটাকি তাঁরা গল্পের ছলে ভাগ করে দিতেন ধীমানবাবু, গৌতম চক্রবর্তী, শুভাশিষ মুখার্জি, সৌমিত্র বসু, সতীনাথ মুখার্জি  প্রমুখ তৎকালীন নবীন অভিনেতাদের মধ্যে, এর মধ্যে ধীমানবাবু আবার বেশ কয়েকটি ছবিতে বিকাশ রায়ের সাথে কাজও করেছেন।     

লিভিং সাউন্ড স্টুডিয়োতে আড্ডায় ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে

১৯৭৯ সালে আকাশবানীর উদ্যোগে রবীন্দ্রসদনে ‘লহরী’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল।  নাটকের কোন বিশেষ পোশাক না পরে শুধুমাত্র মাইক্রোফোনের সামনে হাতে স্ক্রিপ্ট নিয়ে কণ্ঠ অভিনয় করা অর্থাৎ এতদিন শ্রোতারা যেমন রেডিও-তে যেমন নাটক শুনে এসেছেন তাঁরা এখন সামনাসামনি দেখার সুযোগ পেলেন বেতারে অভিনেতারা কিভাবে নাটকপাঠ করে,  শুধুমাত্র কন্ঠ ও সাউন্ড এফেক্ট দিয়ে কিভাবে একটা ঘটনার ছবি আঁকা যায়।  নাট্যসম্পর্কিত আলোচনা ও খুব ছোট ছোট বেশ কয়েকটি নাটক পরিবেশিত হয়েছিল উক্ত অনুষ্ঠানে। শ্রুতিনাটক শব্দটার চল তখনও সেইভাবে হয় নি।   আকাশবানীর এই লহরী অনুষ্ঠান দর্শকদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হবার পর বিকাশ রায় দর্শকের সামনে একটু অন্যভাবে একটা দীর্ঘ নাটক উপস্থাপনা করা যায় তার চিন্তাভাবনা শুরু করেদিলেন।  বেছে নিলেন রবীন্দ্রনাথের ‘শেষের কবিতা’ উপন্যাস। মূল উপন্যাসটিকে একটু কাটছাঁট করে পাঠের আয়োজন করলেন।  অমিত রে-র চরিত্রে বিকাশ নির্বাচন করলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে। ইতিমধ্যে ‘কাঁচকাটা হীরে’ ছবিতে সৌমিত্র বিকাশ রায়ের ছেলের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।  কিন্তু এতবড় উপন্যাসের নাট্যপাঠ কি দর্শক ধৈর্য ধরে শুনবে এ নিয়ে সংশয় ছিল সৌমিত্রবাবুর। এর আগে শিশির ভাদুড়ী একক নাট্যপাঠ করেছেন, শম্ভু মিত্রও করেছেন কিন্তু অনেকে মিলে শুধুমাত্র শ্রুতিনির্ভর আঙ্গিকে একটি উপন্যাসের নাট্যরূপ পরিবেশনের নিদর্শন আগে কখনো দেখা যায় নি। সৌমিত্রবাবুর স্মৃতিচারণায় জানা যায় বিকাশ তাঁকে বলেছিলেন যদি তিনি অমিত রে চরিত্রটি করতে রাজী হন তাহলেই তিনি শেষের কবিতা-র শ্রুতিনাট্য প্রকল্পে তিনি এগোবেন।  চরিত্রটি অভিনয় করার সময় সৌমিত্র দেখলেন অমিত রে চরিত্রটির সংলাপ কি অসাধারন সম্পাদনা করেছেন বিকাশ।  উপন্যাসে অমিত-এর অনর্গল বাক্যধারাকে কেটেছেঁটে প্রয়োজনমাফিক কমিয়ে আনা কি অসীম শক্ত কাজ সেটা সৌমিত্রবাবু দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। অথচ বিকাশ এমনই অসামান্য দক্ষতার সাথে  সম্পাদনা করেছিলেন যে, কোথাও উপন্যাসের এতটুকু মর্যাদা হানি হয় নি।

নাটকে সৌমিত্র-এর বিপরীতে লাবন্য চরিত্রে ছিলেন লিলি চক্রবর্তী, এছাড়া অন্যান্য চরিত্রে ছিলেন নীলিমা দাশ, শ্রাবন্তী মজুমদার, সোনালী সেন, জগন্নাথ বসু, ঊর্মিমালা বসু, ধীমান চক্রবর্তী ও ভাষ্যপাঠে ছিলেন পার্থ ঘোষ, গৌরী ঘোষ এবং বিকাশ রায় স্বয়ং। নাটকের সঙ্গীত পরিচালনায় ছিলেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায় এবং আলোর দ্বায়িত্বে ছিলেন তাপস সেন।     

এই নাটকের প্রসঙ্গে উঠলেই আজও নস্টালজিক হয়ে পড়েন এই নাটকের মনিভূষণ চরিত্রে অভিনয় করা আর এক প্রবীণ অভিনেতা ধীমান চক্রবর্তী। তাঁর কথায় নাটকের রিহার্সাল হত H.M.V. এর রিহার্সাল রুম এ।  যখন মঞ্চে উপস্থাপিত করা হল তখন মঞ্চসজ্জাতেও বিশেষ লক্ষ্য রেখেছিলেন বিকাশ ও সৌমিত্র পত্নী দীপা চট্টোপাধ্যায়।   নাটকের প্রথম শো হয়েছিল রবীন্দ্রসদনে।  পর্দা উঠলে দর্শক দেখতে পেত পিছনে একটা নীল রঙের পর্দা, তাতে রডোডেনড্রন গাছ আঁকা, শিলং-এর একটা অদ্ভুত শান্ত পরিবেশ আনার জন্য।  মঞ্চের তিনদিকে তিনটি চেয়ার, টেবিল, তিনটে মাইক, তিনটে মৃদু আলো শিল্পীদের স্ক্রিপ্ট পড়ার জন্য, আর মাঝখানে ভাষ্যকারদের বসার জন্য তিনটে চেয়ার, টেবিল, মাইক ও আলো। টেবিলগুলো খুব সুন্দর টেবিল কভার দিকে ঢাকা। তাছাড়া মঞ্চে যাতে গাছ-ফুলের টব যাতে ঠিকঠাক মতো সাজানো হয় সেদিকেও পরিচালক বিকাশের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি থাকত।  নাটকপাঠ চলাকালীন যিনি পাঠ করছেন তখন তার ওপর দূর থেকে ফোকাস করা হত। তাঁর উপর আলোটা আরও উজ্জ্বল করে দেওয়া হত। পাশাপাশি নাটকের প্রয়োজন অনুযায়ী প্রয়োগ করা হত নাটকের জন্য তৈরি করা হেমন্তবাবুর আবহসঙ্গীত, রবীন্দ্রসংগীতের সুর,  কখনো সেটার, কখনো বাঁশি – সব মিলিয়ে পরিবেশটা উপস্থিত সমস্ত শ্রোতাদের একটা অন্য কল্পরাজ্যে নিয়ে যেত।

এইভাবে বেশ কয়েকটি শো হবার পর H.M.V. এর বিমান ঘোষ এই নাটকটিকে লং প্ল্যে রেকর্ড হিসাবে প্রকাশ করলেন। ‘শেষের কবিতা’র অভূতপূর্ব সাফল্যের পর বিকাশ এবার রবীন্দ্রনাথের আরও একটি নাটক ‘চিরকুমার সভা’ করার প্রস্তুতি নিলেন। শুরু হল মহড়া। এই নাটকে অক্ষয়ের চরিত্রে গায়ক ও অভিনেতা সন্তু মুখোপাধ্যায় কয়েকটি শো করার পর কোন একটি অজানা কারনে সরে দাঁড়ান।  বলাই বাহুল্য কিছুটা সমস্যায় পড়েছিলেন বিকাশ। আর তারপরই  তিনি আর এক কাণ্ড ঘটিয়ে বসলেন। অক্ষয়ের চরিত্রে নিয়ে এলেন নাটকের সঙ্গীত পরিচালক হেমন্ত মুখোপাধ্যায়-কে। এটাই হেমন্তবাবুর লোকসমক্ষে প্রথম শ্রুতি অভিনয় তার সাথে খালি গলায় গান।  নাটকে রসিক চরিত্রে ছিলেন বিকাশ এবং অন্যান্য চরিত্রে সুমিত্রা রায়, প্রেমাংশু বসু, জগন্নাথ বসু, বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়, মনু মুখোপাধ্যায়, শুক্লা বন্দ্যোপাধ্যায়, ধীমান চক্রবর্তী ইত্যাদি আরও অনেকে।  দর্শক/শ্রোতা অবাক হয়ে শুনতেন অভিনয়ের সঙ্গে হেমন্তবাবুর খালি গলায় গান তার সাথে বিকাশের অভিনয় তো আছেই।   বেশ কয়েকটি শো সাফল্যের সাথে হবার পর একদিন বিকাশ এই নাটকের অভিনয় বন্ধ করে দিলেন এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়ে বসলেন।  

রবীন্দ্রসদনে 'চিরকুমার সভা' নাটকের পোস্টার

দিনটা ছিল ১৯৮৪ সালের ২০ শে মার্চ। প্রেস ক্লাবে রীতিমতো সাংবাদিক সন্মেলন করে বিকাশ জানালেন নিজের অভিনয় জীবনের অবসরের কথা। সবাই স্তম্ভিত।  সংক্ষিপ্ত ভাষণে তিনি স্মরণ নিলেন তাঁর জীবনের আদর্শ উপাস্য দেবতা রবীন্দ্রনাথের।  ভাষণ শেষে তিনি রবীন্দ্রনাথের একটি লাইন কোট করেছিলেন, “পেয়েছি ছুটি বিদায় দেহ ভাই, সবারে আমি প্রনাম করে যাই”। সেদিনের অনুষ্ঠান শেষে সবাই ছিল নীরব। অনুষ্ঠানে উপস্থিত আর এক অভিনেতা বসন্ত চৌধুরী বলেছিলেন যে বিকাশদার মতো লোকের ঠিকঠাক মুল্যায়ন হয় নি এই বৈশম্য বোধহয় এ দেশেই সম্ভব।  লবি আর লবি করেই একটা লোকের প্রকৃত যোগ্যতাকে খুব খাটো করে দেওয়া হয়।  সত্য সেলুকাস কি বিচিত্র এই দেশ।  শোনা যায় এই বক্তব্যের জন্য বসন্ত চৌধুরীর মতো ব্যাক্তিকেও হেনস্থা হতে হয়েছিল।  এরপর বিকাশ একেবারে অন্তরালে চলে গিয়েছিলেন।  জীবনের শেষ কটাদিন তিনি লাইব্রেরীতে পড়াশুনায় বুঁদ হয়ে থাকতেন, চলচ্চিত্র জগতের বিশেষ কারও সাথে দেখা করতেন না। প্রবাসী পুত্র সুমিত বাবাকে আমেরিকাতে নিজের কর্মস্থলে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন কিন্তু বিকাশ রাজী হন নি।  আরও একটি ঘটনা বিকাশের মনকে একেবারে দুমড়ে মুচড়ে ভেঙ্গে দিয়েছিল। আদরের কন্যা নন্দিনী মারণরোগ ক্যানসারে অকালে চলে যান।    মন খারাপ হলেই চলে যেতেন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনে।  নিস্পলক চোখে তাকিয়ে থাকতেন পরমহংসের শ্বেতপাথরের মূর্তির দিকে।  ১৬ই এপ্রিল ১৯৮৭ সালে ওনার চলে যাবার দিন কেওড়াতলা শ্মশানে মাত্র হাতে গুটি কয়েকজন লোকের উপস্থিতি যেন বড্ড চোখে লাগছিল তাঁর গুণমুগ্ধ কিছু লোকের।  কিছু কিছু মানুষের চলে যাওয়া যেন হাতের মুঠো থেকে ঝুরো ঝুরো বালির শব্দহীন ঝরে যাবার মতোই। তারপর নিরবিছিন্ন শূন্যটার দিকে তাকিয়ে মনে হয় সেই মানুষটি আর নেই, মানুষটি চলে গেছেন, অথচ সেদিনও ছিলেন বিকাশ রায় ।

                                                            সমাপ্ত 

তথ্যঋণ ঃ-

১. সাতরঙ (প্রথম পর্ব) – সম্পাদনা রবি বসু

২. প্রসঙ্গ শ্রুতিনাটক – সম্পাদনা ড. সনাতন গোস্বামী

৩. আনন্দলোক ও উল্টোরথ পত্রিকা

৪. একদিন নবপত্রিকা – বিশেষ বিকাশ রায় সংখ্যা

৫.  শারদীয় পুরশ্রী ১৪২১ সংখ্যা  

৬.  মিলেমিশে বিশেষ হেমন্ত মুখোপাধ্যায় সংখ্যা 

৭. আজকাল, আনন্দবাজার, বর্তমান ও সেই সময় সংবাদপত্র

৮. লেখায় ব্যবহৃত সমস্ত ছবি উল্লেখিত বিভিন্ন বই ও পত্রপত্রিকা থেকে গৃহীত  

    ও নাটকের সমস্ত ভিডিও ইউটিউব হতে প্রাপ্ত

৯. বিশেষভাবে ঋণী বর্ষীয়ান অভিনেতা ধীমান চক্রবর্তীর কাছে ।  বিভিন্ন সময়ে দেওয়া ওনার পরামর্শ এই লেখা সম্পূর্ণ করতে খুব সাহায্য করেছে।

 

 ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’-এর বেতার নাট্যরূপ

 শেষের কবিতা উপন্যাসের শ্রুতিনাট্যরূপ

 বাক্স রহস্য নাটক

 

বিকাশ রায়ের কণ্ঠে একটি রবীন্দ্র কবিতা আবৃত্তি 

২টি মন্তব্য:

Dhiman chakraborty বলেছেন...

গবেষণা মূলক লেখা, বেশ ভালো, কিছু কিছু এদিক ওদিক হবে যেমন বলেছি, মোনে হচ্ছে "valobasa"নামে একটা ছবি বিকাশদা র নিজেরই প্রোডাকশন বোধ হয় সুচিত্রা সেন নায়িকা, সেটাও একটু দেখো, আরো চর্চা করো, আরো লেখো document হয়ে থাকবে, খুব দরকার, Best of luck.

Probir's Feel Notes বলেছেন...

#Dhiman Chakraborty

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।